ডিএসইতে সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন রেকর্ড

 ডেস্ক নিউজ |  Tuesday, June 8th, 2021 |  12:48 am

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থানের পর রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে সূচক কমলেও লেনদেনের রেকর্ড হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইতে সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৮ টাকা। যা গত ১০ বছর ৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। এর আগে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকার। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ব্যাপক ধস নামে শেয়ারবাজারে। সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমে যায় ব্যাপকভাবে।

এবিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট শেয়ারবাজার বান্ধব হয়েছে। করপোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত, খুবই সাহসী সিদ্ধান্ত।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল ও উজ্জীবিত করতে ট্রেজারি বন্ড, আধুনিক পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইন্সট্রমেন্টের লেনদেন, ওটিসি বুলেটিন বোর্ড ও ইটিএফ চালুর পাশাপাশি ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত করার মতো উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া কর্পোরেট কর হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে অধিক সংখ্যক ভাল শেয়ার পুঁজিবাজারে আসবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত এই বাজেটে করপোরেট কর হার কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী নতুন বছরের প্রস্তবিত বাজেট দেয়ার পর ছিল শেয়ারবাজারের প্রথম কার্যদিবস। এদিন লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। ব্যাংক, বীমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের সব শেয়ারের দাম কমায় দিনভর সূচক ওঠানামার মধ্যদিয়ে সপ্তাহের প্রথমদিন রোববার লেনদেন শেষ হয়। এই তিন খাতের শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল বেশি। অন্যদিকে সিমেন্ট ও প্রকৌশল খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বেশি ছিল। প্রথম ১৪ মিনিটের লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে যায়।

পরবর্তীতে সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও তা শেষ পর্যন্ত টেকেনি। লেনদেনের শেষ দিকে এসে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বাড়লেও দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২০১টির। আর ২০টির দাম অপরিবর্তীত রয়েছে।

অবশ্য বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও ডিএসইতে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৮ টাকা টাকা। যা ১০ বছর ৬ মাস বা ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিএসইতে ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।

রেকর্ড এই লেনদেনের দিনে টাকার অঙ্কের ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৯৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইফাদ অটোসের ৬১ কোটি ২৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে রূপালী ইন্স্যুরেন্স, রবি, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, এসএস স্টিল এবং সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪৩টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।