বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার কর্তৃক আরোপিত কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী হইতে নেত্রকোনা সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে মাইক্রোবাস। লকডাউনকে পুঁজি করে নিচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও।
রোববার (১লা আগস্ট) হাটহাজারীতে ১০৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে তার আগের দিন ৯৫ জনের শরীরে সনাক্ত হয়েছিলো। লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি জনসচেতনতা। ধরাছোঁয়ার বাইরে এই মাইক্রোবাসের অবৈধ সেবা।
লকডাউনের মধ্যে তারা গাড়ি কিভাবে চালাচ্ছে আর কেন চালাচ্ছে জানতে চাইলে সাকিব নামের এক মাইক্রোবাসের চালক বলেন, আমাদের পরিবারপরিজন আছে, তাদের নিয়ে একবেলা না খেয়ে থাকলে কেউ জিজ্ঞেস করবেনা খেয়েছি কিনা। অভাবের কারণে আমরা লকডাউন মানতে পারছিনা।
তিনি আরো বলেন, মাঝপথে পুলিশ ধরলে তাদের কোন রকম ম্যানেজ করে চলি। প্রথমে বলি আমরা রোগী নিয়ে মেডিকেল যাচ্ছি, তাতেও যদি কাজ না হয় তাহলে অন্যভাবে চেষ্টা করতে হয়।
জানা যায়, লকডাউন চলাকালীন সময়ের মধ্যে লকডাউন উপেক্ষা করে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাইক্রোবাসের এই অবৈধ সেবাটি দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। হাটহাজারী পৌরসভা এলাকার হাজী সিদ্দিক সওদাগরের পেট্রোল পাম্প, আজিম পাড়া রাস্তার মাথা, কলেজ গেইট ও ফতেপুর ইউনিয়ন এলাকার চবি ১নং গেইট এলাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে এইসব গাড়ি।
রোববার (পহেলা আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চবি ১নং গেইট এলাকা থেকে লকডাউন উপেক্ষা করে ছেড়ে যাওয়া হাটহাজারী এলাকার জাহাঙ্গীর নামের এক কোম্পানির গাড়ি চট্টমেট্টো চ ৫১-২২৮১ নাম্বারের মাইক্রোবাসের যাত্রী নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার পাঠান পাড়া এলাকার চিত্তরঞ্জনের ছেলে রাজীব মণ্ডল (২৬) বলেন, আমি এইখানে কৃষিকাজ করতাম, কিন্তু কাজ করতে গিয়ে কোদাল লেগে পায়ের আঙ্গুল কেটে যায় আমার। কাটা পা নিয়ে কাজ করতে পারছিনা তাই বাড়ীতে চলে যাচ্ছি।
মাইক্রোবাসে থাকা আরেক যাত্রী সুনামগঞ্জ জেলার গোলাপপুর এলাকার কাদির মিঞার ছেলে মোহাম্মদ জাবিনুর (২০) বলেন, আমি এই এলাকায় কৃষিকাজ করতাম গত পরশু আমার নানী মারা যান, সেই কারণে আমি বাড়ীতে যাচ্ছি।
ভাড়া কত টাকা নিচ্ছে জানতে চাইলে তারা বলেন, স্বাভাবিকভাবে আমরা ৮০০ টাকা দিয়ে যাইতে পারলেও লকডাউনে ১২০০টাকা করে জনপ্রতি নিচ্ছে, তারপরও আমাদের বেশী প্রয়োজন হওয়ায় আমরা বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি।
এবিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীদুলের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু রায়হানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই বিষয়ে এখনো কোন তথ্য পায়নি, এইমাত্র জানতে পারলাম বিষয়টি, তবে গাড়িটা না আটকিয়ে ছেড়ে দিতে বলে পরবর্তীতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।
চট্টলা২৪/লকডাউন উপেক্ষা