মহিউদ্দিন চৌধুরী দেশের রাজনীতিতে একটা ব্র্যান্ডঃ কাদের

  |  Tuesday, December 15th, 2020 |  6:20 pm

আওয়ামী লীগে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো নেতার অভাব রয়েছে মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিনি মেয়র থাকাকালীন ভোর বেলায় উঠে পরিচ্ছন্নকর্মীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করতেন।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত‍্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, একজন রাজনীতিবিদের সবচেয়ে বড় অর্জন জনগণের ভালোবাসা। মহিউদ্দিন চৌধুরী তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন। সেদিক দিয়ে আমি বলবো, তিনি একজন সফল রাজনীতিবিদ। মহিউদ্দিন চৌধুরী দেশের রাজনীতিতে একটা ব্রান্ড। তিনি চট্টগ্রামের মানুষকে ভালোবেসেছিলেন। চট্টগ্রাম স্বার্থ রক্ষায় তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন।

কাদের বলেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের উন্নয়নে তিনি সবসময় সজাগ ছিলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকেই তিনি শুরু করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ। ৬৫, ৬৯ ও ৭১ সালে তিনি নগর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেন। তখন তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন।

‘কারাগার থেকে বের হতে মহিউদ্দিন চৌধুরী পাগলের অভিনয় করেন। এতে কাজও হয়। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি চলে যান ভারতে। সেখানে প্রশিক্ষণরত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্লাটনের কমান্ডার নিযুক্ত হন। ’

দলের জন্য মহিউদ্দিন চৌধুরী অনেক ত্যাগ করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি একসময় শুরু করেন শ্রমিক রাজনীতি। করেছিলেন যুবলীগ। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর মৌলভি সৈয়দের নেতৃত্বে গঠন করেন মুজিব বাহিনী। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে দলের পতাকা তিনি আঁকড়ে ধরেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। দলের জন্য তিনি অনেক ত্যাগ করেছেন। মহিউদ্দিন ভাই একজন জনমানুষের নেতা। তাই তার কাজও ছিলো সবার জন্য কিছু করা।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো কর্মীবান্ধব নেতা দলে অভাব রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। পরে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ও তিনি বিএনপির এক নেতাকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। আজকের রুপসী চট্টগ্রাম তারই অবদান।

‘তিনি চট্টগ্রামের শিক্ষা-স্বাস্থ্য সবক্ষেত্রে সমান অবদান রেখেছেন। রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। থাকবে প্রতিযোগিতা। তার সময়ে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা ছিলো। এসব এখন রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। ’

রাজনীতি থেকে সৌজন্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়ুদল কাদের বলেন, রাজনীতিতে আজকে সৌজন্য পোস্টার আছে, সৌজন্য বিলবোর্ড আছে, সৌজন্য ব্যানার আছে কিন্তু সৌজন্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মহিউদ্দিন ভাই এক্ষেত্রেও ছিলেন বিরল। সবার সঙ্গে তার ছিলো সুসম্পর্ক। রাজনীতিবিদের বিয়ের অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন চৌধুরী ২ মিনিটের জন্য হলেও উপস্থিত থাকতেন। এমনকি তিনি ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে সড়কে পরিচ্ছন্নকর্মীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে তিনিও রাস্তা পরিষ্কার করতেন।

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব‍্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুনীল সরকার, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম প্রমুখ।