৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাত মাসে চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে গেছে ৫২টি পোষাক কারখানা। রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে আরও কিছু; যেগুলো যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে! তবে বিজিএমইএ (বাংলাদেশ পোষাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি) বলছে, কিছু বন্ধ হয়ে গেলেও চালু হয়েছে একাধিক কারখানা।
শিল্প পুলিশের তথ্যে মতে, চট্টগ্রামে মোট তৈরি পোষাক কারখানার সংখ্যা ৫৮০টি। সেগুলোর মধ্যে চালু আছে ৫২৮টি। সেই হিসাবে বিজিএমইএর ১৮টি, বিকেএমইএর দুটি, বিটিএমএর একটি, বেপজায় নয়টি এবং অন্যান্য ২২টি পোষাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ কারখানাগুলোর বেশিরভাগই রুগ্ন অবস্থায় ছিল। সরকার পরিবর্তনের পর অর্ডার কমে যাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়ে বন্ধ হয়ে যায় এসব কারখানা!
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘খুব সম্প্রতি বেইস টেক্সটাইল নামে একটি গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া চাক্তাইয়ের ফোর ব্রাদার্স ফ্যাশন হাউস ও বায়েজিদের আল আমিন টেক্সটাইলের অবস্থা খুব একটা ভালো না। কারখানাগুলোতে প্রায় প্রতিমাসেই বেতন নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। যতটুকু বোঝা যাচ্ছে, এগুলোর অবস্থা ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কম। বর্তমানে ৫২টি বন্ধ হয়েছে। কিছুদিন পরে আরও কিছু কারখানা বন্ধ হতে পারে।’
কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তৈরি পোষাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ কার্যক্রম পরিচালনায় গঠন করা সহায়ক কমিটির সদস্য এবং ক্লিপটন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। চট্টলা২৪’কে বলেন, ‘এখন অর্ডার নাই, এটি বলা যাবে না। তবে সমস্যাটা হলো অর্ডারের কোনো ধারাবাহিকতা নাই। এতে রুগ্ন অবস্থায় থাকা বেশি কিছু গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কিছু বন্ধ হতে পারে। তবে সরকার পরিবর্তনের পর কিছু গার্মেন্টস যেমন বন্ধ হয়েছে, তেমনি কিছু গার্মেন্টস চালুও হয়েছে।’
গার্মেন্টস খাতের রুগ্ন অবস্থা উত্তরণ প্রসঙ্গে মহিউদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কিছু বুঝতে পারছি না। এর কারণ হিসেবে প্রথম হলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা একটু অগোছালো। আর দ্বিতীয়টি – আমেরিকা কী চাচ্ছে তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্টের কারণে ওই দেশের বেশকিছু অর্ডার নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এরপরও আমরা যারা দীর্ঘদিন এ ব্যবসার সঙ্গে আছি, তারা আশাবাদী। এখন একটু ভাটা গেলেও ঠিকই জোয়ার আসবে।’
অন্যদিকে বেপজায় বন্ধ হওয়া ৯টি কারখানা নিয়ে কথা হয় সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবাহান এবং কেইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মশিউদ্দিন বিন মেসবাহর সঙ্গে। তারা জানান, বেপজার তালিকাভুক্ত দুটি রপ্তানিমুখী অঞ্চলে কোনো কারখানা বন্ধ হয়নি। তবে কিছু কারখানার মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে।
কেইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মশিউদ্দিন বিন মেসবাহ চট্টলা২৪’কে বলেন, ‘আমাদের শিল্প অঞ্চলে মোট ৪১টি কারখানা আছে। কেইপিজেডের পুরো জায়গা অকুপাইড হয়ে গেছে। এখানে নতুন করে কোনো বিনিয়োগের সুযোগ নেই। কোনো কারখানা বন্ধও হয়নি। তবে কিছু কারখানায় পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে।’
ডেস্ক নিউজ/চট্টলা২৪ হৃদয়